By %MONIR%

বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৭

রমেশচন্দ্র দত্ত ৩০ নভেম্বর ১৯০৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন৷ তিনি ছিলেন একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক। তিনি বঙ্কিমচন্দ্রের অনুরোধে বাংলা উপন্যাস রচনায় অগ্রসর হন এবং বিশেষ সাফল্য অর্জন করেন।

Post By
Kalipada Roy

রমেশচন্দ্র দত্ত ৩০ নভেম্বর ১৯০৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন৷ তিনি ছিলেন একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক। তিনি বঙ্কিমচন্দ্রের অনুরোধে বাংলা উপন্যাস রচনায় অগ্রসর হন এবং বিশেষ সাফল্য অর্জন করেন।
রমেশচন্দ্র দত্ত
জন্ম ১৮৪৮
মৃত্যু ১৯০৯
জাতিসত্তা বাঙালি
যে জন্য পরিচিত বাঙালি ঔপন্যাসিক
প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা
রমেশ চন্দ্র দত্ত একটি বিশিষ্ট বাঙালি কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার পরিবারের প্রায় সবাই ছিলেন উচ্চশিক্ষিত৷ তার বাবা ছিলেন ঈসাম চন্দ্র দত্ত এবং মা ছিলেন ঠাকামাণী৷ তার বাবা ঈসাম চন্দ্র তৎকালীন বাংলার ডেপুটি কালেক্টর ছিলেন৷ অফিস চলাকালীন সময়ে রমেশ চন্দ্র দত্ত তার সঙ্গে থাকতেন৷ রমেশ চন্দ্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্কুলে পড়াশোনা করেছেন৷ তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী মথুরানাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও পড়াশুনা করেছেন। এছাড়াও তিনি ডেভিড হেয়ার প্রতিষ্ঠিত হেয়ার স্কুলে পড়াশোনা করেন৷ নৌকা দূর্ঘটনায় তার বাবার আকস্মিক মৃত্যুর পর ১৮৬১ সালে তার চাচা শশী চন্দ্র দত্ত, যিনি একজন প্রখ্যাত লেখক ছিলেন, তার অভিভাবকত্ত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷ রমেশ চন্দ্র তার চাচা সম্পর্কে লিখেছেন যে রাতের বেলা তিনি পরিবারের অন্যান্যদের সাথে বসতেন এবং তাদের প্রিয় বিষয় ছিল ইংরেজী কবিদের কবিতা চর্চা করা৷[১]
রমেশ চন্দ্র ১৮৬৪ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন৷ পরে ১৮৬৬ সালে তিনি মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জনের মাধ্যমে এবং স্কলারশীপ অর্জনের মাধ্যমে আর্টস পরীক্ষায় পাস করেন৷ ১৮৬৮ সালে বিএ ক্লাসের ছাত্র থাকা অবস্থায় পরিবারের অনুমতি না নিয়ে তিনি এবং তার দুই বন্ধু বিহারী লাল গুপ্ত এবং সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান৷ রমেশ চন্দ্র সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কৃতিত্বকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন৷ সে সময় দীর্ঘ সময় ধরে ১৮৫৩ সালের আগে ও পরে, যখন ইংল্যান্ডে আইসিএস পরীক্ষা চালু করা হয়, তার পূর্বে মূলত বিট্রিশ কর্মকর্তারাই গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদগুলোতে নিয়োগপ্রাপ্ত হতেন৷ ১৮৬০ সালের দিকে ভারতীয়রা, বিশেষ করে বাঙালি বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায়ের লোকজন হতে ভারতীয় উপমহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদগুলোতে আসীন হতে শুরু করেন৷
Image may contain: 1 personইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এ রমেশ ব্রিটিশ লেখকদের নিয়ে পড়াশোনা করেন৷ তিনি লন্ডনের মিডল ট্যাম্পল এ আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন৷ তিনি ১৮৬৯[২] সালের ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস এর ওপেন এক্সামিনেশন এ তৃতীয় স্থান [৩] লাভের মাধ্যমে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন৷
সিভিল সার্ভিস সম্পাদনা

১৮৭১ সালে রমেশ চন্দ্র দত্ত আলীপুরের সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে আইসিএস(ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস) এ যোগদান করেন৷ পদটিতে তার নিয়োগ ১৮৫৮ সালের ১লা নভেম্বর রাণী ভিক্টোরিয়ার রঙ ও ধর্মমত নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রতি সমান সুযোগের ঘোষণার [৪] প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে৷
ভয়ঙ্কর সাইক্লোনের কারণে ১৮৭৪ সালে নদীয়া জেলার মেহেরপুরে এবং ১৮৭৬ সালে ভোলা জেলার দক্ষিণ শাহবাজপুরে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়৷ এলাকাগুলোতে জরুরী ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা এবং দূর্যোগ পরবর্তী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া একান্ত অপরিহার্য হয়ে পড়ে৷ রমেশ চন্দ্রের তত্ত্বাবধানে এ কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়৷ ১৮৮২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রমেশ চন্দ্রকে সার্ভিসের নির্বাহী শাখায় নিয়োগ দেয়া হয়৷ তিনিই প্রথম ভারতীয়, যাকে নির্বাহী পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়৷ ১৮৯৩ সালে তিনি বর্ধমান জেলার জেলা অফিসার এবং ১৮৯৪ সালে বর্ধমান বিভাগের কমিশনার হন৷ রমেশ চন্দ্র ১৮৯৫ সালে উড়িষ্যার বিভাগীয় কমিশনারের দায়িত্ব লাভ করেন৷ ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম ভারতীয়, যিনি বিভাগীয় কমিশনার পদে আসীন হন৷[৩]
রাজনীতি সম্পাদনা
রমেশ চন্দ্র নরমপন্থী জাতিয়তাবাদী রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন৷ কংগ্রেসের শুরুর দিকে তিনি কংগ্রেসের সাথে জড়িত ছিলেন৷ ১৮৯৯ সালে তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন৷
সাহিত্যে অবদান সম্পাদনা
১৮৯৪ সালে রমেশ চন্দ্র বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের প্রথম সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নবীনচন্দ্র সেন পরিষদটির সহ-সভাপতি ছিলেন৷[৫] বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৮৯৩ সালে পরিষদটি গঠন করা হয়৷
সূদীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি অনেকগুলো বই লিখেছেন৷ এছাড়াও তিনি মহাভারত ও রামায়ন অনুবাদও করেছেন৷ গুণী এ মনীষী ১৯০৯ সালের ৩০এ নভেম্বর মারা যান৷

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন