By %MONIR%

বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৭

পদার্থ ও উদ্ভিদবিদ বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু

Post By 
Kalipada Roy



পদার্থ ও উদ্ভিদবিদ বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু
বাঙালি পদার্থবিদ, উদ্ভিদবিদ, জীববিজ্ঞানী ও কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা
স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ২৩শে নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন৷ তিনি একজন বাঙালি পদার্থবিদ, উদ্ভিদবিদ ও জীববিজ্ঞানী এবং প্রথম দিকের একজন কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা।[১] তাঁর গবেষণা ফলে উদ্ভিদবিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে তোলে এবং ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবহারিক ও গবেষণাধর্মী বিজ্ঞানের সূচনা করে।[২] ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স তাঁকে রেডিও বিজ্ঞানের জনক বলে অভিহিত করে।[৩]
জগদীশ চন্দ্র বসু
উদ্ভিদের স্নায়ুতন্ত্র বিষয়ে বক্তৃতারত বসু (প্যারিস, ১৯২৬)
জন্ম
৩০ নভেম্বর ১৮৫৮
ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ
মৃত্যু
২৩ নভেম্বর ১৯৩৭
গিরিডি, বাংলা, ব্রিটিশ ইন্ডিয়া
বাসস্থান
কলকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি,
ব্রিটিশ ইন্ডিয়া
জাতীয়তা
বাঙালি
কর্মক্ষেত্র
পদার্থবিজ্ঞান, জৈব পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠান
প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা
প্রাক্তন ছাত্র
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
ক্রাইস্ট কলেজ, কেমব্রিজ, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়
পিএইচডি উপদেষ্টা
জন উইলিয়াম স্ট্রাট, ৩য় ব্যারন রেলি
উল্লেখযোগ্য ছাত্ররা
সত্যেন্দ্রনাথ বসু
পরিচিতির কারণ
মিলিমিটার তরঙ্গ
বেতার
ক্রেসকোগ্রাফ
জীবনী
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রয়্যাল ইন্সটিটিউট, লন্ডন, ১৮৯৭ সন।
জগদীশ চন্দ্র বসু ১৮৫৮ সালের ৩০শে নভেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি অঞ্চলের ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে তাঁর পরিবারের প্রকৃত বাসস্থান ছিল। [৪] তার পিতা ব্রাহ্ম ধর্মাবলম্বী ভগবান চন্দ্র বসু তখন ফরিদপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন।[৫] এর পূর্বে তিনি ১৮৫৩ থেকে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ভগবান চন্দ্রই এই স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন। পরবর্তিতে তিনি বর্ধমান ও অন্যান্য কিছু অঞ্চলের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেছেন।[৬]:৩-১০
ইংরেজ সরকারের অধীনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও ভগবান চন্দ্র নিজের ছেলেকে ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করাননি। জগদীশ চন্দ্রের প্রথম স্কুল ছিল ময়মনসিংহ জিলা স্কুল। বাংলা স্কুলে ভর্তি করানোর ব্যাপারে তাঁর নিজস্ব যুক্তি ছিল। তিনি মনে করতেন ইংরেজি শেখার আগে এদেশীয় ছেলেমেয়েদের মাতৃভাষা আয়ত্ত করা উচিত। বাংলা স্কুলে পড়ার ব্যাপারটি জগদীশ চন্দ্রের জীবনে যেমন গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করেছে তেমনি বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করতেও সাহায্য করেছে। এর প্রমাণ বাংলা ভাষায় রচিত জগদীশের বিজ্ঞান প্রবন্ধগুলো। ভাষার প্রতি বিশেষ মমত্ববোধ ছাড়াও ভগবান চন্দ্র চেয়েছিলেন তার পুত্র দেশের আপামর জনসাধারণের সাথে মিলেমিশে মানুষ হোক এবং তার মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হোক।[৭] জগদীশ চন্দ্রের পরবর্তী জীবনে তাঁর প্রথম বাংলা স্কুলের অধ্যয় গুরুত্বপূর্ণ ছাপ ফেলেছিল।[n ১]
জগদীশ কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে পড়াশোনা করে ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন।[৫] এই কলেজে ইউজিন ল্যাফন্ট নামক একজন খ্রিষ্টান যাজক প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের ওপর তাঁর আগ্রহ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।[৪][৬]:৩-১০ এরপর তিনি আইসিএস পরীক্ষায় বসার জন্য ইংল্যান্ডে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও ভগবান চন্দ্র এতে রাজী হননি কারণ তিনি চেয়েছিলেন তাঁর পুত্র একজন বিদ্বান হোন।[৮]
বাবার ইচ্ছা ও তার আগ্রহে তিনি ১৮৮০ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞান পাঠের উদ্দেশ্যেই লন্ডনের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান, কিন্তু অসুস্থতার কারণে বেশিদিন এই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি।[৯] তাঁর ভগ্নীপতি আনন্দমোহন বসুর আনুকুল্যে জগদীশ চন্দ্র প্রকৃতি বিজ্ঞান সম্বন্ধে শিক্ষালাভের উদ্দেশ্যে কেমব্রিজের ক্রাইস্ট কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকে ট্রাইপস পাশ করেন। ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাঠ সম্পন্ন করেন[১০]। কেম্ব্রিজে জন উইলিয়াম স্ট্রাট, ৩য় ব্যারন রেলি, মাইকেল ফস্টার, জেমস ডেওয়ার, ফ্রান্সিস ডারউইন, ফ্রান্সিস মেটল্যান্ড বালফুর, সিডনি ভাইনসের মতো বিখ্যাত বিজ্ঞানসাধকেরা তাঁর শিক্ষক ছিলেন।
প্রেসিডেন্সি কলেজে যোগদান
জগদীশ চন্দ্র বসু
১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে জগদীশ চন্দ্র ভারতে ফিরে আসেন। তৎকালীন ভারতের গভর্নর-জেনারেল জর্জ রবিনসন, প্রথম মার্কুইস অব রিপন অনুরোধে স্যার অ্যালফ্রেড ক্রফট বসুকে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক নিযুক্ত করেন। কলেজের অধ্যক্ষ চার্লস হেনরি টনি এই নিয়োগের বিপক্ষে ছিলেন। শুধু যে তাঁকে গবেষণার জন্য কোন রকম সুবিধা দেওয়া হত না তাই নয়, তিনি ইউরোপীয় অধ্যাপকদের অর্ধেক বেতনেরও কম অর্থ লাভ করতেন।[৬]:১১-১৩[১১] এর প্রতিবাদে বস্য বেতন নেওয়া বন্ধ করে দেন এবং তিন বছর অবৈতনিক ভাবেই অধ্যাপনা চালিয়ে যান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন